Banner Advertise

Monday, June 23, 2008

[vinnomot] হয় জনগণ অন্ধ, অথবা চারদিকে কেবলই অন্ধকার।


সাজানো ছকে আটকে গেছে রাজনীতি


মনজুরুল হক : রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্ম দেয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ওপরে বসে কলকাঠি নাড়ার ক্ষমতা দেওয়ায় নিচেকার সবকিছু পুতুল নাচের মডারেটরের হাতে বাঁধা পড়ে। তিনি যেমনি নাচান তেমনি নাচতে হয় 'পুতুলদের'। প্রচলিত ধারণা মতে পুকুর বা দীঘি খোঁড়ার আগে প্রথমত গর্ত খুঁড়তে হয়। ক্রমে গর্তটা পুকুরে বা দীঘিতে রূপান্তরিত হয়। এইসব প্রচলিত ধারণা মডার্ন কোলাবরেশনের পাওয়ারের হাতে পড়ে বদলে গেছে। এখন আর প্রচলিত অর্থে 'প্রচলিত' বলে কিছু নেই। ১১ জানুয়ারি পটপরিবর্তনের পর লক্ষবার বলা হয়েছে বর্তমান সরকার যে করেই হোক দেশে 'প্রকৃত গণতন্ত্র' প্রতিষ্ঠা করবেনই। সাধু প্রস্তাব। 'প্রকৃত' কোনো কিছুতে দ্বিমত থাকার কিছু নেই, ছিলও না, কিš' সরকার 'প্রকৃত অর্থে' এ যাবৎ যা যা করেছেন তার কোনো কিছুতেই এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না যে, সত্যি সত্যি প্রকৃত গণতন্ত্র বলে কিছু একটা আসতে যাচ্ছে। ছোট্ট খুপরি থেকে কয়েদিকে বের করে বিশাল হলরুমে বন্দী করে রাখাকে যদি 'মুক্তি' বলা হয় তাহলে কোনো কথা নেই। কার্যত বাংলাদেশের মানুষ সে ধরনেরই একটি নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র বা হলরুমে বন্দী থাকার মতো মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
প্রকৃত দূরের কথা একটা মিনিমাম গণতন্ত্রে উন্নীত হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে মানুষের অবাধ মত প্রকাশের সুযোগ, অবাধে নির্বাচন করার সুযোগ, অবাধে প্রার্থী বাছাই এবং পছন্দের সুযোগ, নিঃসঙ্গ চিত্রে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ, বাধাহীনভাবে ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ, মিটিং মিছিল, সমাবেশ করার সুযোগ সর্বোপরি চিন্তামুক্তির বা বিবেকমুক্তির সুযোগ। বলাবাহুল্য এর কোনোটাই জনগণের নেই। এই সকল প্রচলিত ব্যবস্থাগুলো বঞ্চিত হয়ে হাতে পায়ে বেড়ি পরানোর মতো রুদ্ধ পরিবেশে যন্ত্রচালিত রোবটের মতো নির্বাচন করতে হবে এবং সেই রোবটের নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও অদৃশ্য সুতোর টানে রোবটের মতো আচরণ করবেন।
নিয়ন্ত্রিত নয় কেবল, সরাসরি চাবি দেওয়া পুতুলের মতো উঠতে-বসতে হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে বা সরকারকে। এটা হলো অত্যন্ত অগ্রসর আধুনিক ম্যাকানাইজড মডার্ন সামন্ততন্ত্র, প্রকারন্তরে যা রাজতন্ত্র বা গোষ্ঠীতন্ত্র। এ ধরনের একটি আধুনিক গোষ্ঠীও তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে তাকে 'প্রকৃত গণতন্ত্র' বলা হবে এবং সেটাই এদেশের কিংকর্তব্যবিমূঢ় জনগণ মেনে নেবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আর সরকার এই ধারণা বাস্তবায়ন করবার জন্য সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে। অবশ্যি এই ধারণার বাইরে কিছু পজেটিভ চিন্তার মানুষ নিয়ত পজেটিভ জ্ঞানবটিকা ফেরি করে চলেছেন। টিভি চ্যানেল খুললেই দেখা যাবে পেশাদার বিদ্যাজীবী বক্তারা অনর্গল বকে যাচ্ছেন। রাজনীতি-অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ভ্যালুজ-ট্যালুজ ককটেল করে শেষমেশ যা সার্ভ করছেন তাকে বলা হচ্ছে আশাবাদ। কিসের আশাবাদ? না- দুর্নীতি টুর্নীতি দমন হয়ে, দুর্নীতিবাজরা সাজা পেয়ে পরিবারতন্ত্রের বিদায় হয়ে, মাস্তানি-মামদোবাজি মুক্ত, একটা অবাধ নির্বাচন হয়ে যেন বিশ্বের সেরা গণতন্ত্রের মডেল হতে চলেছে বঙ্গদেশ। আর সেই অনাগত পুলকে বঙ্গদেশের মানুষ কেন এখনো কাছা খুলে ধেই ধেই করে নেচে উঠছেন না সেইটাই ভাববার বিষয়।
দেশের মানুষ এখন অস্থিমজ্জায় বুঝতে পেরেছেন যে, বিএনপি-জামাতের দুঃশাসনের তপ্ত কড়াই থেকে মানুষকে বাঁচানোর নামে আসলে তাদেরকে জ্বলন্ত চুলোর মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিএনপি-জামাত দুঃশাসনে মানুষ অর্ধপঙ্গু হয়েও চলাচলের ক্ষমতা রাখতো। এখন পুরোপুরি পঙ্গু। পক্ষঘাতগ্রস্ত। তারপরেও মানুষ ছেলে ভুলোনো কথায় নয়, সরাসরি বন্দুকের ভয়ে, গ্রেপ্তারের ভয়ে, প্রাণের মায়ায়, অধিকš' বেঁচে থাকার শর্তে বিশ্বাস রাখতে চেয়েছিল যে জরাজীর্ণ, কালিমা ভেঙেচুরে, দুমড়ে মুচড়ে শেষ পর্যন্ত একটা নতুন কিছু হতে পারে সেই নতুন কিছুর জন্য একজন মানুষ সারা জনমে যেটুকু ত্যাগ স্বীকার করেনি তার সুদে আসলে সবটুকু ত্যাগ স্বীকারে বাধ্য হয়েছে। পিঠ-পেট এক হয়ে যাওয়া অসহায় মানুষ তবুও নিরুপায় হয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থেকেছে। কিš' এখন ১৮ মাস পার হওয়ার পর মানুষ কী দেখলো? দেখলো তাদের গুড়ে কেবল বালি নয়, রাশি রাশি কাঁকর! সরকার রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের নিয়ে যে খেলাগুলো খেলতে চেয়েছিল, মাঝে কিছুদিনের বিরতির পর এখন তা-ই খেলা চলছে। সরকারের সাজানো ছকেই সবকিছু ঘটে যাচ্ছে, এবং ঘটে যাবে। আইয়ুব আমলের মতো রাজপথে সেনা কনভয় ছুটে বেড়াচ্ছে না। জিয়ার আমলের মতো রাত ১১টার পর কারফিউ নেই, এরশাদের সামরিক শাসনের যাঁতাকল নেই, কাবুলের রাস্তার মতো আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে গোলাগুলি নেই, জিম্বাবুয়ে উগান্ডার মতো সামরিক পোড়ামাটি নীতির অপারেশন নেইÑ অথচ ভয়াবহভাবে একটা রোবটিক শাসন ব্যবস্থার দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বন্দুকের নলগুলো এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেন মনে হয় সবখানেই বন্দুকের নল, সবখানেই গুলি বেরিয়ে যাওয়ার ভয়, সবখানেই প্রাণ নিঃশেষ হওয়ার আতঙ্ক। আর এ রকম অদৃশ্য আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারাটাই হচ্ছে বর্তমান সেনাসমর্থিত সরকারের বড়ো সাফল্য। মোল্লা মোলবিরা, গার্মেন্টস শ্রমিকরা দাবিদাওয়া নিয়ে রাজপথে নামতে পারলেও রাজনীতিকরা পারছেন না। অদৃশ্য নলের ভয়ে রাজনীতিকরা এমনই ভীত যে তাদের যেভাবে বসতে উঠতে বলা হচ্ছে তারা সেভাবেই উঠছেন বসছেন। এই ফাঁকে সরকার একের পর এক তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। মূল পরিকল্পনা অবশ্যই একটা নির্বাচন এবং সেটা আসছে ডিসেম্বরে। সেই নির্বাচনের আগে দুই নেত্রীকে 'মাইনাস' করা প্রায় সম্পন্ন। একজন শেখ হাসিনা সরকারের শর্তাবলী মেনেই দেশের বাইরে গেছেন। অন্যজন বেগম জিয়া তার দুই ছেলের জন্য কিছুটা দরকষাকষি করছেন বটে, কিš' শেষ পর্যন্ত তিনিও বাইরে চলে যাবেন অর্থাৎ 'মাইনাস টু' সাকসেসফুলি ডান। এরপর স্থানীয় নির্বাচন। এটা সরকার করতে চায় টেস্টকেস হিসেবে। স্থানীয় নির্বাচনে কারা নির্বাচিত হয়ে আসছে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী, কোন রাজনৈতিক দলের পাল্লা ভারী ইত্যাদি দেখে অবশেষে সরকার জাতীয় নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ করবে। কোন স্ক্রু কতোটা টাইট দিতে হবে সেটা জানা যাবে স্থানীয় নির্বাচনের পর। সেটা বুঝতে পেরে প্রধান প্রধান দলগুলো অবশ্য প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে, কিš' ওই যে অদৃশ্য নল বা অদৃশ্য সুতো, সেই সুতোর টানে দলগুলোর অহিংস শান্তিবাদী প্রতিবাদ অগ্রাহ্য হয়ে গেলো ২০ জুন। এদিন ৪ সিটি কর্পোরেশনে এবং ৯ পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেলো। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোকে আর এক দফা বোল্ড আউট করা হলো। এই স্থানীয় নির্বাচনের সময় জরুরি আইনের কিছু ধারা নাকি শিথিল করা হবে। নির্বাচনের সময় সরকার যদি বেগতিক দেখে তাহলে ধরে নেওয়া যায় আবার ওই শিথিল ধারা কঠোর হবে। এবং পূর্ণ জরুরি আইনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। জরুরি আইনের অধীনেই সংসদ গঠিত হবে। সেই সংসদও চলবে জরুরি মোডিফিকেশন করা বেসামারিক জরুরি আইনের আদলে। বেশ এরই নাম তাহলে প্রকৃত গণতন্ত্র! এটা যে বাস্তবায়ন হবে তাতে কারো সন্দেহ থাকার কারণ নেই, কেননা বিশ্বগণতন্ত্রের ঘোড়েল মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের বিটিম যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যেই অভিনব এই মিলিটারি ডেমোক্র্যাসিকে সাপোর্ট করে বাণী এবং আশকারা দুই-ই দিয়েছে। তারা নিজেদের দেশে চার-পাঁচ স্তরের ডেমোক্র্যাসির প্রাকটিস করলেও তাঁবেদার বঙ্গজাতির আবাসভূমি বঙ্গদেশের জন্য এন্তেযাম করেছে সুহার্ত-কারজাই মার্কা মিলিটারি ডেমোক্র্যাসির। বঙ্গদেশের মানুষ খুবই রাজনৈতিক সচেতন (!) বলে গিলবো না গিলবো না করেও শেষ পর্যন্ত গিলে বসেছে সেই টোপ, ফাৎনা, ছিপসহ। যেটুকু গিলতে বাকি আছে তাও চিবুক চিড়ে হলেও গেলানো হবে ডিসেম্বরের মধ্যে।
সাধারণ মানুষের এখানে তেমন কিছু করবার নেই। তারা কী দেখলো? তারা দেখলো নেত্রীদ্বয়ের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন টান্দোলন ধুয়ো উঠতেই সারা দেশে পঁচিশ-ছাব্বিশ হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পোরা হলো। জেলখানায় জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের নাকি ছেড়ে দিয়ে নতুনদের সংকুলান করা হবে। দেখলো 'আপোষহীন' নেত্রীদ্বয় সরকারের শর্ত মেনে 'মাইনাস' হলেন। ওই দলগুলোর বাকি নেতারা সরকারের খুদ কুড়ো পেয়ে সীমিত হাঁটাহাঁটি করতে পারাকে রাজনৈতিক অধিকার জ্ঞান করলেন। আন্দোলন-টান্দোলন শিকেয় তুলে তারা এখন মিউমিউ করছেন। ব্যবসায়ীরা সরকারের কোলে বসে গরিব মানুষের ছাল তুলে নিলো। সুবিধাবাদী তাঁবেদাররা জাতীয় সরকারের মুলোর পেছনে ছুটলো। আর প্রচণ্ড জনপ্রিয় সরকার একটি দিনও জরুরি আইন ছাড়া কারো কথার ভরসা করতে পারলো না! এই জনগণ ভরসা করার মতো কাউকেই আর খুঁজে পাচ্ছে না। হয় জনগণ অন্ধ, অথবা চারদিকে কেবলই অন্ধকার।
২১ জুন ২০০৮
মনজুরুল হক : কলাম লেখক।
monjuraul@ yahoo. com
http://www.bhorerkagoj.net/online/news.php?id=51821&sys=1

অদক্ষ তত্ববধায়কদের জন্য দেশের প্রতিদিনের ক্ষতি কত শত কোটি টাকা? আল্লাহ যাকে যখন ইচ্ছা ক্ষমতা দান করেন,মাইনাস টু ফরমুলায় তাই হাসেন ।

__._,_.___
MARKETPLACE
Blockbuster is giving away a free trial of Blockbuster Total Access to smart movie lovers like you.
Recent Activity
Visit Your Group
Yahoo! News

Kevin Sites

Get coverage of

world crises.

Yahoo! Finance

It's Now Personal

Guides, news,

advice & more.

Yahoo! Groups

Stay healthy

and discover other

people who can help.

.

__,_._,___