সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবেই কাজ পেয়েছে গ্যাটকোগ্যাটকো (২)সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবেই কাজ পেয়েছে গ্যাটকো আবুল কাশেম : সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবেই চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত এলাকার আইসিডি এবং ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের আইসিডি ইয়ার্ডের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পেয়েছে গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড (গ্যাটকো)। দরপত্রে অংশ নেয়া অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় গ্যাটকো'র উদ্ধৃত দরের পরিমাণ ছিল অনেক কম। জানা গেছে, অভিজ্ঞতার বিচারে দরপত্রে শেষ পর্যন্ত বিবেচনায় থাকা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা সি-কম লজিস্টিক্স লিমিটেডের তুলনায় সর্বনিম্ন দরদাতা গ্যাটকো'র দরের পার্থক্য ছিল প্রায় দুই কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার ৭৫০ টাকা। তাছাড়া, দরপত্রে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্যাটকো'র কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজে প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা না থাকলেও কোম্পানির মালিক ও পরিচালকদের এ কাজে পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। এসব বিষয় বিবেচনা করেই নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পায় গ্যাটকো। জানা গেছে, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন ও চট্টগ্রাম বন্দরে আইসিডি ইয়ার্ডে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজে একক ঠিকাদার নিয়োগে ২০০৩ সালের ১লা ফেব্র"য়ারি টেন্ডার আহ্বান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ওই টেন্ডারে সাড়া দিয়ে ২৫টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র ক্রয় করলেও ছয়টি প্রতিষ্ঠান তা দাখিল করে। ওই দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ সি-কম লজিস্টিক্স লিমিটেড, বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, সাঈফ পাওয়ার টেক করপোরেশন, নবাব অ্যান্ড কোম্পানি, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড (গ্যাটকো) এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশন। ২০০৩ সালের ১লা জুন সকল দরদাতার উপস্থিতিতে টেন্ডার বাক্স খোলে বন্দর কর্তৃপক্ষ। দরপত্রসমূহের কারিগরি মূল্যায়ন করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ দু'জন পরিচালক এবং প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সমন্বয়ে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সদস্য ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) এএম সানওয়ার হোসেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম এবং বন্দরের পরিচালক (বিঃ ও যাঃ) লুৎফুল কবির। এ কমিটি পরপর তিনটি সভায় দরপত্রে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন পেশ করে। এসব প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে সি-কম লজিস্টিক্স কোম্পানি, বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং গ্যাটকোকে বাছাই করে প্রতিবেদন দেন কমিটির সদস্যরা। তবে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান ও পরিচালকদের কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজের যে পূর্বঅভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল তা পূরণ করতে সক্ষম হয় বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। গ্যাটকোসহ সি-কম কোম্পানির কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও গ্যাটকো'র পরিচালক শাহজাহান এম হাবিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনহার এ চৌধুরী এবং সি-কমের পরিচালক মো. আমিরুল হকের এ কাজের পূর্বঅভিজ্ঞতা ছিল। এসব বিষয় বিবেচনা করেই এ কোম্পানি দু'টিকে বাছাই করে দরপত্রের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। ওই কমিটির প্রতিবেদন ২০০৩ সালের ৩রা জুলাই বন্দর কর্তৃপক্ষ বোর্ড অনুমোদন দিয়ে কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। আর্থিক দরপত্র প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি ২০০৩ সালের ৯ই জুলাই ওই কোম্পানি তিনটির উপস্থিতিতে তাদের আর্থিক প্রস্তাবগুলো উন্মুক্ত করে। দরপত্রের আর্থিক প্রস্তাবে দেখা যায়, সি-কম লজিস্টিক্স কোম্পানি এ কাজের জন্য ৮ হাজার ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার টাকা, বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ৮ হাজার ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং গ্যাটকো ৭ হাজার ৮১৮ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার টাকার প্রস্তাব করে। কমিটি দরপত্রগুলো মূল্যায়ন করে গ্যাটকোকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচনা করে প্রতিবেদন দাখিল করে। এ ব্যাপারে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের পরিবহন বিভাগের মতামত এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের ছাড়পত্র পায়। বন্দর কর্তৃপক্ষ বোর্ড একই বছরের ২৩শে জুলাই সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ কাজের জন্য গ্যাটকোকে অনুমোদনের সুপারিশ করে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের পাঠানো মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় একজন যুগ্ম প্রধানকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। এ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান (পরিকল্পনা) খন্দকার খালিকুজ্জামান, সদস্য ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (জাহাজ) মো. আবদুল মতিন, উপ-প্রধান (পরিকল্পনা) জয়ন্ত কুমার নন্দী, উপ-প্রধান (রেলওয়ে উইং) মো. আবদুল মতিন, চট্টগ্রাম বন্দরের উপ-প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন এবং সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) কাজী আবদুল মোমেন। ওই কমিটি ২০০৩ সালের ১০ই ও ২৮শে সেপ্টেম্বর বৈঠকে ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। তারা বন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। যদিও গ্যাটকো'র কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজে পূর্বঅভিজ্ঞতা ছিল নাÑ তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করেছে, যে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় তার মালিক অথবা পরিচালকদের কর্মদক্ষতা দ্বারা। এ কারণে গ্যাটকো'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনহার এ চৌধুরী এবং পরিচালক শাহজাহান এম হাবিবের ক্লাসিক করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতার বিষয়টি পর্যালোচনা করে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটির বিবেচনার জন্য পাঠানোর সুপারিশ করে। মামলার লিখিত এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দরপত্র কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে দরপত্রের শর্তানুযায়ী দরদাতা গ্যাটকো কোম্পানির মালিক ও পরিচালকদের কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজে কোন অভিজ্ঞতা নেই উল্লেখ করা হলেও একই প্রতিবেদনের শেষে গ্যাটকোকে রেসপনসিভ ঘোষণা করে কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করে। প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে বলা হয়েছে, গ্যাটকো'র কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের এ কাজে অভিজ্ঞতা থাকায় গ্যাটকো কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারবে বলে কমিটি মনে করে। এ অবস্থায় গ্যাটকোকে কারিগরিভাবে (টেকনিক্যালি) বিবেচনা করা যেতে পারে। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ২০০৩ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর সংশোধিত মূল প্রতিবেদনে এ অসঙ্গতির ব্যাখ্যা দিয়েছে। এদিকে গ্যাটকোকে কারিগরিভাবে রেসপনসিভ করার পর অপর দরদাতা বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নম্বর ৫১৫৩/৩০০৩) দাখিল করে। ঠিকাদার নিয়োগে স্থগিতাদেশ চেয়ে করা ওই রিট পিটিশন হাইকোর্ট ২০০৩ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর নামঞ্জুর করে এবং তা শুনানির জন্য হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়। তবে রিট আবেদনকারী রিটের শুনানির জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তা নিষ্পত্তি হয়নি। তবে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অন্য কোন দরদাতা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন ২০০৩-এর ৫৩ ধারা অনুযায়ী রিভিউ প্যানেলের কাছে কোন আবেদন করেনি। কার্যপ্রণালী বিধিমালা ১৯৯৬-এর ৪(৫) বিধি অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রণালয় এবং তার অধীনস্থ অফিসসমূহে এ বিধিমালা প্রতিপালনের জন্য দায়ী। এছাড়া, ১৯(১) বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবের নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় দরপত্র প্রস্তাবের সব দিক পরীক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সুপারিশসহ একটি প্রস্তাব সার-সংক্ষেপ আকারে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বিবেচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ২০০৩ সালের ১৩ই অক্টোবর পাঠায়। এ প্রস্তাব প্রণয়নে সকল বিধি পালনের নিশ্চয়তা দেয়া এবং বিধি-বিধান যাতে ভঙ্গ না হয় তা ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং প্রয়োজনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নজরে আনার দায়িত্ব বিধি ৩২(১) অনুযায়ী সচিবের ওপর ন্যস্ত। মন্ত্রণালয়ের সচিবের পাঠানো কাগজপত্রের সম্পূর্ণতা এবং যথার্থতা নিশ্চিত করতে বিধি ১৯(৫) অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওপর ন্যস্ত। এক্ষেত্রে গ্যাটকো'র ব্যাপারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যে সার-সংক্ষেপ পাঠায় তা আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে তা যথার্থ মনে হওয়ায় তারা তা ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে পাঠায়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে তার যথার্থতা প্রমাণিত হওয়ায় প্রস্তাবটি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উত্থাপনের জন্য কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করে এবং চেয়ারম্যানের সম্মতির পর কমিটিতে উত্থাপন করা হয়। ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি প্রথম দফায় কতগুলো সুপারিশ দিয়ে নতুন দরপত্র আহ্বানের কথা বললেও পরে শর্তসাপেক্ষে গ্যাটকোকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের অনুমোদন দেয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর গ্যাটকো'র সঙ্গে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কাজের চুক্তি সম্পাদন করে সরকার। http://www.manabzam
অদক্ষ তত্ববধায়কদের জন্য দেশের প্রতিদিনের ক্ষতি কত কোটি টাকা? |
MARKETPLACE
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch format to Traditional
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
.
__,_._,___