'যুদ্ধাপরাধী' বাবার বিচার দাবি করে সন্তানদের সংবাদ সম্মেলন Wed, Apr 16th, 2008 5:33 pm BdST
বগুড়া, এপ্রিল ১৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বাবার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে তার বিচার দাবি করেছে তিন সন্তান। এ দাবিতে বুধবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা।
সন্তানদের অভিযোগ, তাদের বাবা বগুড়ার ব্যবসায়ী ওসমান বিহারী একাত্তরে রাজাকার ছিল। এখনও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওসমান বিহারীর মেয়ে শবনম খান বলেন, "আমার বাবা এক জন যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী। এই ঘৃণায় তার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক পর্যন্ত রাখিনি।"
এ সময় শবনম খানের সঙ্গে ছিলেন তার ভাই তারেক হাসান পাপ্পু ও বোন জেনিফার।
লিখিত বক্তব্যে শবনম খান বলেন, "আমার বাবা ওসমান বিহারী বগুড়ার প্রথম সারির রাজাকার ছিল। একাত্তরে তিনি যে দাপট দেখিয়েছিলেন, এখনও সে দাপট দেখিয়েই চলেছেন। মেয়ে হয়েও এক জন স্বাধীনতাবিরোধী কুলাঙ্গার পিতাকে ঘৃণাসহ তার বিচার এবং গ্রেপ্তার দাবি করছি।"
ওসমান বিহারী তার অপর স্ত্রীর সন্তানদের নিয়ে এখনও শবনম খানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
শবনম খান বলেন, "বাবা এবং অন্য মায়ের সন্তানরা সশস্ত্র সহযোগীদের নিয়ে আমার স্বামী জাবেদ খানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে উচ্ছেদের জন্য প্রাণনাশের হুমকি-ধমকিসহ দিয়ে আসছে। গত ১৩ মার্চ তারা আমার স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালায়। তারা আমার স্বামীকে মারধর করে এবং দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে প্রায় ৬৩ হাজার টাকা লুট করে।"
শবনম খান অভিযোগ করেন, "এ সব ঘটনায় থানায় মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবা ওসমান বিহারী বলে বেড়াচ্ছেন, তিনি পাল্টা মামলা দিয়ে আমাদের জেল খাটাবেন।"
শবনম খান বলেন, "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও গ্রেপ্তারে যদি সাংবিধানিক জটিলতা থাকে, তাহলে হামলার ঘটনায় ওসমান বিহারীকে গ্রেপ্তার ও বিচার করতে সাংবিধানিক কী জটিলতা রয়েছে?"
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন তিন ভাই-বোন।
এতদিন পর 'যুদ্ধাপরাধী' বাবার বিচার চাইছেন কেন- সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শবনম খান বলেন, "তার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক রাখিনি। তবে আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি সারাদেশে জোরেশোরে ওঠায় আমরাও বাবার বিচার চাইছি।"
ওসমান বিহারীর বাড়ি শহরতলীর মাদলা গ্রামে। তিনি এক স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সেখানে থাকেন। বগুড়া নিউমার্কেটের ওসমানিয়া ক্লথ স্টোরসহ কয়েকটি দোকানের মালিক তিনি।
তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান শবনম হকরা বগুড়া শহরেই থাকেন। তাদের মা মারা গেছেন।
ওসমান বিহারীর বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ কে মজিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ওসমান বিহারী ছিল চিহ্নিত রাজাকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সে বগুড়া থেকে পালিয়ে যায়। শুনেছি, ওই সময় সে ঢাকায় আত্মগোপন করে। '৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সে এলাকায় ফিরে আসে।"
সন্তানদের অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওসমান বিহারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম- এর কাছে সব অভিযোগই অস্বীকার করেন।
তিনি কোনও হামলায় জড়িত ছিলেন না বলেও দাবি করেন।
যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ। একাত্তরে শান্তিপ্রিয় ছিলাম, এখনও শান্তিপ্রিয় আছি।"
স্বাধীনতার পর আত্মগোপণের বিষয়ে ওসমান বিহারী বলেন, "স্বাধীনতার পর কিছুদিনের জন্য ঢাকা ছিলান। অন্য কোনও বিষয় নয়, ঢাকায় থাকতে ভালো লাগছিল বলেই সেখানে ছিলাম।"
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch format to Traditional
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
__,_._,___