ভাগ্যহত জাতির ভাগ্যলিপিতে কি আছে?
http://www.manabzamin.net/page1.htm
ভাগ্যহত জাতির ভাগ্যলিপিতে কি আছে?
আসাফ্উদ্দৌলাহ্
'এ-জাতির দুর্ভাগ্য, প্রিয় ব্রুটাস, আমাদের বিধি নক্ষত্রে নয়Ñ আমাদের কর্মফলে।' নবম সংসদের জন্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ২০০৬-পরবর্তী প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যর্থতার জন্য দায়ী প্রেসিডেন্টের লোভ এবং শোচনীয় চরিত্রহীনতা। তিনিই আবার জরুরি ক্ষমতাবিধি চাপিয়ে দেন জাতির ওপর। সেনাবাহিনীকে ডেকে আনেন এবং প্রেসিডেন্ট পদের মান-মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলেন অব্যাহতভাবে। ২০০৬ সালের গোড়ার দিকে হুইল চেয়ারে বসে চিকিৎসার জন্য তার সিঙ্গাপুরে যাওয়া এবং ফিরে আসা, দেশবাসীর দোয়া চাওয়াÑ সবই আজ ইতিহাস। এখন আর কারও সহানুভূতির প্রয়োজন নেই তার। এখন জনগণই পেতে চাইছে তার সহানুভূতিÑ যা দেখিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি যাতে ফিরে যেতে পারেন স্বস্থানে। এখন সুখবসন্ত তার পদানত। সুযোগ-সুবিধার অপার সুধা তো বার্ধক্যগ্রস্তকেও এনে দেয় যৌবনের তেজ। এ জন্যই তিনি হয়ে থাকবেন এই সময়ের এক চোখ-ধাঁধানো নজির।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনাবাহিনীর 'সহায়তামূলক অধিগ্রহণ' যখন ঘটে তখন গণতন্ত্রের ট্রেনের এক রূপক ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছিলেন, এ ট্রেন 'লাইনচ্যুত হয়েছে, একে আবার লাইনে তুলতে হবে'। এই হতভাগ্য রেল-ইঞ্জিনের পরবর্তী গন্তব্য কোথায়Ñ সে সম্পর্কে কোন কিছু উল্লেখ করেন নি তিনি। মিডিয়ার গণ্যমান্যদের সঙ্গে স¤প্রতি এক সভায় তিনি দশ পদের আলু-খাবার পরিবেশন করেছেন। মুখভর্তি আলু নিয়ে অতিথিরা অনেক প্রশংসা করেছেন সেনাপ্রধানের আলু-উদ্যোগের। আশা করা যায়, এরপর থেকে বিশেষ-বিশেষ উপলক্ষে ফলের ঝুড়ির বদলে বন্ধুর বাড়িতে উপহার যাবে আলুর ঝুড়ি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার নিয়োগকে এক কূটনৈতিক দায়িত্ব বলে ভুল করে শোরগোল তুলেছেন 'রোড ম্যাপ' নিয়েÑ যাতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি বাদ না গেলেও অঘোষিত আলোচ্যসূচির মধ্যে ঢুকে পড়েছে একগাদা 'বিবিধ'। জনগণ বা সংসদের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধ পন্থায় তিনি তড়িঘড়ি এখন সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন আরোপিত কিছু নির্বাচনী সংস্কারকে।
২০০৮ সাল শেষ হওয়ার আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একঘেয়ে বুলি প্রধান উপদেষ্টা অক্লান্তভাবে (জনগণ অবশ্য ক্লান্ত) আউড়ে যাওয়ার সময় এ কথাও বলছেন যেÑ দেশের 'গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎকে এক দৃঢ় ভিত্তি দিতে হবে'। কি প্রহসন! বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের রূপরেখা প্রণয়নের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন এক অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা! স¤প্রতি এক বিচিত্র আগবাড়া মন্তব্যে দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ট্রুথ কমিশনের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাব্যতা নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। অথচ প্রস্তাবিত এই কমিশন এখন পর্যন্ত আলোর মুখই দেখেনি।
বেশির ভাগ উপদেষ্টাই অতিকথনে মুখরিত। অনেকেই এ কথা সে কথা বলে ঝামেলায় জড়ান। দায়িত্ব নেয়ার আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা মন্তব্য করেছিলেন, নিত্যপণ্যের মূল্য হ্রাস করা অসম্ভব কোন কাজ নয়।
শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হওয়ার দু' মাস পর তিনি সফল হয়েছেন একটি ক্ষেত্রে। নানা মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সমন্বয়ে এক কমিটি খাড়া করেছেন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বেÑ যাতে ব্যর্থতার দায় ভাগাভাগি করে নেয়া যায়। এই কমিটির কোন কার্যকারিতা এখনও দৃশ্যমান নয়। খাদ্য ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ফোঁড়ন কেটেছিলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমানোর কোন রোমান্টিক উপায় তার হাতে নেই। ভেবেছিলেন, খুব চৌকস মন্তব্য করেছেন তিনি। কিন্তু পরে যখন জনসাধারণকে অযাচিতভাবে উপদেশ দিলেন খাবার কম-কম খেতেÑ তখন বাচাল হিসেবেই পরিচিতি পেলেন সব মহলে। 'কিছু লোক মারা গেলেই শুধু' বুঝতে হবে দুর্ভিক্ষÑ তার এ মন্তব্যটি অন্য কিছু নয়, মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে তার ধারণার এক দুঃখজনক প্রতিধ্বনি। সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিলগ্নীকরণ সম্পর্কিত তার সা¤প্রতিক মন্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পত্রপত্রিকা।
নিত্যপণ্যের দাম যতই চলে যাচ্ছে দরিদ্র ও মধ্য আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে ততই বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে উঠছে জনগণের রোষবহ্নি। তারা বলছে, আমরা কি সংস্কার খাবো?এই সঙ্কটে হাবুডুবু অবস্থায় চরম আতঙ্কের ব্যাপার হলো, সরকারের অগ্রাধিকার পরিবর্তিত হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের দিকে। এর উদ্দেশ্য আমাদের স্থায়িত্ব ও সার্বভৌমত্বের প্রতি বিভিন্ন বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ হুমকির বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে অনির্ণেয় ব্যবস্থা নেয়া। তাহলে কি জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া নির্বাচিত সরকারকে এসব সমস্যা মোকাবেলার যোগ্য বলে বিবেচনা করা যায় না?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই সংশ্লিষ্টদের পরিকল্পিত অভ্যুদয়ের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এরা বহিরাগত আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষা করার যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা না করে একটি আনুষ্ঠানিক ও স্থায়ী ব্যবস্থার অধীনে জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার চায়। একটি অনির্বাচিত সরকারের ওপর ভর করে আগামী নির্বাচিত সরকারগুলোর ওপর খবরদারির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত করার আকাক্সক্ষা দেশের জন্য তা কতবড় দুর্ভাগ্য বয়ে আনছে চিন্তাশীল জনগণ নিশ্চয়ই তা অনুধাবন করতে পারছেন। এই আয়োজনের প্রতি মতলবি সমর্থন দেয়ার জন্য সভা সমিতি সেমিনারে ও টেলিভিশনের টক শো-তে পেছন থেকে ঠেলে দেয়া একটি পরিচিত চক্র মুখর হয়েছে। এদের চেহারা সুরত জনগণ চিনে রাখছে নিজেদের ভবিষ্যৎ কল্যাণ ও মঙ্গলার্থেই।
অনাহারে প্রতিটি মৃত্যূর জন্য ফখরুদ্দিন আর মঈনের বিরুদ্ধে একটি করে খুনের মামলা করতে হবে ।
-Would Be Mahathir of BD
Be a better friend, newshound, and know-it-all with Yahoo! Mobile. Try it now.
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch format to Traditional
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe
.
__,_._,___